বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ভক্তের আবেগ ও ভালোবাসার নাম ফুটবল। শুধু মাঠে নয়, এই খেলাটি ভক্তদের হৃদয়ের খুব গভীরে জায়গা করে নিয়েছে। বিশেষ করে যখন বড় কোনো আন্তর্জাতিক বা ঘরোয়া টুর্নামেন্ট শুরু হয়, তখন সেই উত্তেজনা যেন সীমা ছাড়িয়ে যায়। ফুটবল ভক্তরা তাদের প্রিয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়ে টিভি স্ক্রিনের সামনে বসে পড়েন, যেন একেকজন যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো সৈনিক। এই প্রবন্ধে আমরা তুলে ধরবো বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও মর্যাদাপূর্ণ পাঁচটি ফুটবল টুর্নামেন্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা।
৫. কোপা আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা

দক্ষিণ আমেরিকার সর্বোচ্চ মহাদেশীয় প্রতিযোগিতা কোপা আমেরিকা, যা বিশ্বজুড়ে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়। এই টুর্নামেন্টের মর্যাদা কতখানি, তা বোঝা যায় ২০২১ সালের আসরে লিওনেল মেসির আবেগঘন প্রতিক্রিয়া দেখে। ২০১৬ সালের হতাশা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২০২1 সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মাধ্যমে আর্জেন্টিনা ও মেসি দেখিয়ে দিয়েছেন এই শিরোপার গুরুত্ব কতখানি।
শুধু আর্জেন্টিনা নয়, ব্রাজিল, চিলি, কলম্বিয়ার মতো দেশগুলিও অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে এই টুর্নামেন্টে। রোনালদো নাজারিও, আলেক্সিস সানচেজ, হেমস রদ্রিগেজের মতো ফুটবলাররা ইতিহাস গড়েছেন এই আসরে।
শেষ ৫টি কোপা আমেরিকা বিজয়ী:
সাল | চ্যাম্পিয়ন |
---|---|
২০২৪ | আর্জেন্টিনা |
২০২১ | আর্জেন্টিনা |
২০১৯ | ব্রাজিল |
২০১৬ | চিলি |
২০১৫ | চিলি |
৪. ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, ইউরোপ

ইউরোপের সেরা জাতীয় দলগুলোর মধ্যে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টটি ‘ইউরোপের কোপা আমেরিকা’ হিসেবে পরিচিত। প্রতি চার বছর অন্তর এই টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হয় এবং এক মাসব্যাপী ইউরোপজুড়ে ফুটবল উৎসব বয়ে যায়।
সাম্প্রতিক ইউরো আসরেই দেখা গেছে কীভাবে এক গোল কোটি ভক্তকে আনন্দে ভাসাতে পারে আবার আরেক গোল দুঃখে ডুবিয়ে দিতে পারে। ইংল্যান্ডের কোল পামারের গোল যেমন ইংলিশ সমর্থকদের উল্লাসে ভাসিয়েছিল, ঠিক চার মিনিট পর স্পেনের মিকেল ওয়ারজাবালের গোলে সেই স্বপ্ন ভেঙে যায়। ইউরো এমনই এক টুর্নামেন্ট, যেখানে ফুটবলের আসল রূপ প্রতিফলিত হয়।
শেষ ৫টি ইউরো বিজয়ী:
সাল | চ্যাম্পিয়ন |
২০২৪ | স্পেন |
২০২১ | ইতালি |
২০১৬ | পর্তুগাল |
২০১২ | স্পেন |
২০০৮ | স্পেন |
৩. প্রিমিয়ার লিগ, ইংল্যান্ড

ইংল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় ঘরোয়া লিগ প্রিমিয়ার লিগ আজ বিশ্ব ফুটবলে একটি নিজস্ব অবস্থান তৈরি করেছে। এক সময় সমালোচকরা এই লিগের ইউরোপীয় সফলতার অভাব নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, আজ প্রিমিয়ার লিগের দলগুলো ইউরোপে আধিপত্য বিস্তার করছে।
পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যেভাবে আধিপত্য দেখিয়েছে, তা অবিশ্বাস্য। তবে এই মৌসুমে আমরা দেখেছি ছোট দলগুলো যেমন নটিংহ্যাম ফরেস্ট, বোর্নমাউথ এবং ব্রাইটন ইউরোপীয় স্থান দখলের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছে। এই অনিশ্চয়তাই প্রিমিয়ার লিগকে সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ লিগে পরিণত করেছে।
শেষ ৫টি প্রিমিয়ার লিগ বিজয়ী:
সাল | চ্যাম্পিয়ন |
২০২৪ | ম্যানচেস্টার সিটি |
২০২৩ | ম্যানচেস্টার সিটি |
২০২২ | ম্যানচেস্টার সিটি |
২০২১ | ম্যানচেস্টার সিটি |
২০২০ | লিভারপুল |
Also Read:
- Crazy Time ক্যাসিনো গেমে কীভাবে জিতবেন — একটি কৌশলগত নির্দেশিকা
- সেরা Crazy Time কৌশল: ট্র্যাকার ছাড়াই জেতার উপায়
২. উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ, ইউরোপ

চ্যাম্পিয়নস লিগ এমন একটি মঞ্চ যেখানে ইউরোপের সেরা ক্লাবগুলো মুখোমুখি হয়। যখন রাতের আলোয় স্টেডিয়াম আলোকিত হয়, তখন ফুটবল যেন হয়ে ওঠে আরও জাদুকরী। এই প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র একটি কাপ জয়ের বিষয় নয়, এটি সম্মানের, ইতিহাসের এবং স্মরণীয় মুহূর্ত তৈরির একটি আসর।
ইস্তাম্বুলের সেই ঐতিহাসিক ফাইনাল, লুকাস মোরার হ্যাটট্রিক—এসবই চ্যাম্পিয়নস লিগের স্মরণীয় অংশ। এই টুর্নামেন্ট ফুটবলের সর্বোচ্চ নাটকীয়তা উপহার দেয় এবং তাই এটি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ প্রতিযোগিতা হিসেবে বিবেচিত।
শেষ ৫টি চ্যাম্পিয়নস লিগ বিজয়ী:
সাল | চ্যাম্পিয়ন |
২০২৪ | রিয়াল মাদ্রিদ |
২০২৩ | ম্যানচেস্টার সিটি |
২০২২ | রিয়াল মাদ্রিদ |
২০২১ | চেলসি |
২০২০ | বায়ার্ন মিউনিখ |
১. ফিফা বিশ্বকাপ, বিশ্ব

বিশ্বকাপ ট্রফিটির দিকে একবার তাকালেই বোঝা যায় এর মাহাত্ম্য কতখানি। মহাদেশীয় প্রতিযোগিতাগুলিকে একত্রিত করে গঠিত এই আসর ফুটবলের সর্বোচ্চ মর্যাদার প্রতীক। এটি এমন একটি আসর, যা একটি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে, তা সে যেকোনো সংকটের মধ্যেই থাকুক না কেন।
বিশ্বকাপে ভালো খেলে একজন খেলোয়াড় বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করতে পারেন। যেমন ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে হেমস রদ্রিগেজের অসাধারণ পারফরম্যান্স তাকে রিয়াল মাদ্রিদ এবং বায়ার্ন মিউনিখের মতো ক্লাবে খেলার সুযোগ এনে দেয়। প্রতি চার বছর পরপর এই টুর্নামেন্ট গোটা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং এর জনপ্রিয়তায় কোনো সন্দেহ নেই।
শেষ ৫টি বিশ্বকাপ বিজয়ী:
সাল | চ্যাম্পিয়ন |
২০২২ | আর্জেন্টিনা |
২০১৮ | ফ্রান্স |
২০১৪ | জার্মানি |
২০১০ | স্পেন |
২০০৬ | ইতালি |